ওয়েবডেস্ক: দ্বিতীয় দিনে পা দিল নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের শতবর্ষ উৎসব।
সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটিতে এদিন দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় বর্তমান বাংলা সাহিত্যে সমাজমাধ্যমের প্রভাবের ওপর এক আলোচনা সভা দিয়ে। এদিনের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক প্রচেত গুপ্ত, বাংলাদেশের সাংবাদিক জয়ন্ত আচার্য, সাহিত্যিক মৌমিতা, সাহিত্যিক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক মৌপিয়া নন্দী। অনবদ্য সঞ্চালনা করেছেন সাংবাদিক নেহাশিস শূর। বাংলা সাহিত্যের ওপর সমাজমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব পড়েছে কি না তা নিয়ে সবারই মতামত অনেকটা একই। প্রচেত গুপ্ত বলেন, “সমাজমাধ্যমের যুগে, প্রযুক্তির যুগে যাঁরা এখনও সাহিত্যচর্চা করছেন তাঁরা আসলে বরাবরই সাহিত্যপ্রেমী। যাঁরা বই ছেড়ে বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে গা ভাসিয়েছেন তাঁরা কোনওদিনই সাহিত্যপ্রেমী ছিলেন না।” সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প কোথাও গিয়ে ডিজিটালাইজ হয়ে উঠেছে। সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে এদিনের আলোচনায়। সাহিত্যচর্চা ধীরে ধীরে লাইক, শেয়ার, কমেন্টের প্রতিযোগিতায় জুড়ে গিয়েছে। কার পোস্টে কত লাইক, কার পোস্টে কত শেয়ার তা দিয়ে কখনওই একজন সাহিত্যিককে বিচার করা যায় না, সাহিত্যকেও বিচার করা যায় না, জানান মৌমিতা। অন্যদিকে, বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বর্তমান যুগে হয়তো বাংলা সাহিত্যের সোশ্যাল মিডিয়ার শরণাপন্ন না হয়ে উপায় নেই। কিন্তু আমরা যেন সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করি, ব্যবহৃত না হয়ে যাই।” সাংবাদিক মৌপিয়া নন্দী বলেন, ” সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল করা, ঘৃণা ছড়ানো এসব কমিয়ে যদি ভাল কাজে ব্যবহার করা যায় তাহলে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে বাংলা সাহিত্য। বই পড়া কমিয়ে দিয়েছে সাধারণ মানুষ। বাচ্চাদের খাওয়াতে গেলে বা শান্ত করতে গেলে এখন হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় মোবাইল। উপহার হিসেবে যে চল ছিল বইয়ের সেটাও কমে গিয়েছে।” তবে অতিথিদের মতে, ভাল দিকও রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার। যে সমস্ত লেখক এখনও পরিচিত হননি, প্রকাশকের কাছে লেখা পৌঁছনোর ক্ষমতা নেই এখনও, সোশ্যাল মিডিয়া তাঁদের সুযোগ করে দেয় নিজেদের দক্ষতা, নিজেদের লেখাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে।
ছবি: তপন মুখার্জি